December 22, 2024
সব আসামিকে খালাসের কারণ জানালেন হাইকোর্ট

সব আসামিকে খালাসের কারণ জানালেন হাইকোর্ট

ডিসে ২০, ২০২৪

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে সকল আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর এ রায় দেন। এর ফলে বিচারিক আদালতে দণ্ডিত ৪৯ জন আসামি, যাঁদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরও অন্তর্ভুক্ত, খালাস পান।

রায়ের কারণ

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মামলার তদন্ত ও অভিযোগপত্র আইনসম্মত ছিল না। প্রধান আসামি মুফতি আব্দুল হান্নানের জবানবন্দির ভিত্তিতে গঠিত সম্পূরক অভিযোগপত্রটি অবৈধ এবং এটির ভিত্তিতে দণ্ড দেওয়া যায় না। প্রথম অভিযোগপত্রও একইভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না। সাক্ষীদের মধ্যে কেউই প্রকৃত খুনি শনাক্ত করতে পারেননি। ফলে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করার মতো কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তদন্ত ও বিচার নিয়ে মতামত

আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মামলাটি পুনরায় তদন্ত হলে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করার সুযোগ তৈরি হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছেন, নতুন তদন্ত শুরু হলে এটি ন্যায়বিচারের পথে অগ্রগতি আনতে পারে। অন্যদিকে, আইনজীবী জেড আই খান পান্না মনে করেন, হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত দায়ীদের জাতির সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন।

পটভূমি

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে এই ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত এবং তিন শতাধিক মানুষ আহত হন। হামলার লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত এই মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন, এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন।

হাইকোর্টের নির্দেশনা

হাইকোর্ট মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞ সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্ত করতে হবে। এছাড়া, যেসব আসামি কারাগারে রয়েছেন এবং যাঁদের অন্য কোনো মামলা নেই, তাঁদের তাৎক্ষণিক মুক্তি দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আপিল করবে কি না, তা এখনো জানা যায়নি। অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। নতুন তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জাতির প্রত্যাশা।

Leave a Reply