১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরসহ ৬ জন খালাস, পরেশ বড়ুয়ার যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামে ২০০৪ সালের বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়
আজ বুধবার (তারিখ: ১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের আপিলের ওপর দীর্ঘ শুনানি শেষে এই রায় দেওয়া হয়।
মামলার পটভূমি
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে কর্ণফুলী নদীর তীরে ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্র ও গোলাবারুদের চালান আটক করা হয়। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া এবং গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পাশাপাশি অস্ত্র আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
আপিল ও ডেথ রেফারেন্স
২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা ওই বছরের মধ্যেই হাইকোর্টে আপিল করেন।
নতুন রায়ের বিশদ
- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ ছয়জন মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন।
- ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
- উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচারিক আদালতের প্রেক্ষাপট
অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (যার ফাঁসি ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে), লুত্ফুজ্জামান বাবর এবং পরেশ বড়ুয়াসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। সেই রায়ই আজ হাইকোর্টে আংশিক সংশোধিত হলো।
এ রায়ে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলার দণ্ডিতদের ভাগ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। দেশের আলোচিত এই মামলার ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে জনগণের মাঝে পুনরায় তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।