আমি সিরিয়া ছেড়ে পালাতে চাইনি: বাশার আল-আসাদ
সিরিয়ার ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের ১২ দিনের অভিযানের মুখে রাজধানী দামেস্ক পতনের পর দেশ ছাড়ার আটদিন পর মুখ খুললেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। সোমবার সিরিয়ান প্রেসিডেন্সির টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
১. দেশ ছাড়ার প্রেক্ষাপট:
- আসাদ বলেন, তার প্রস্থান পরিকল্পিত ছিল না এবং শেষ মুহূর্তে দেশ ছাড়ার ঘটনাও সত্য নয়।
- তিনি দাবি করেন, ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি দামেস্কেই অবস্থান করছিলেন এবং রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
২. রাশিয়ায় আশ্রয়ের পরিস্থিতি:
- আসাদ জানান, ৮ ডিসেম্বর সকালে তিনি সিরিয়ার হেইমিমে অবস্থিত রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে যান যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে।
- ঘাঁটিতে হামলার পর রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। সন্ধ্যায় রুশ সেনা কমান্ড তাকে রাশিয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।
৩. দামেস্কের পতন ও অবস্থা:
- বিবৃতিতে বলা হয়, শীর্ষ সামরিক অবস্থানগুলো ভেঙে পড়ার পর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অচল হয়ে পড়ে।
- এ পরিস্থিতিতে আসাদ বলেন, “আমি কখনও পদত্যাগ বা আশ্রয়ের কথা ভাবিনি।”
- তবে দেশের পতনের পর তার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার “অর্থ ও ভূমিকা আর ছিল না” বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জল্পনার অবসান:
- বিদ্রোহীদের কাছে দামেস্কের পতনের পর আসাদের অবস্থান নিয়ে ব্যাপক জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।
- তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমনকি সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রীও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।
- রাশিয়ার গণমাধ্যম ৯ ডিসেম্বর জানায় যে, আসাদ রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।
উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট:
- আসাদের এই বিবৃতি কতটুকু নির্ভরযোগ্য, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটি এখন কার নিয়ন্ত্রণে আছে, তা স্পষ্ট নয়।
- পরিস্থিতির অবনতির পর আসাদের দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত বিদ্রোহীদের বিজয়েরই প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আসাদ তার বিবৃতিতে দেশ ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন এবং জল্পনা খারিজ করে দাবি করেছেন যে, তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে সিরিয়ার পতনের পর তার অবস্থানের রাজনৈতিক ও কার্যকরী ভিত্তি আর ছিল না বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।