December 22, 2024
সিরাজগঞ্জে মাদ্রাসা মাঠে খেলনা বন্দুক হাতে ছাত্র, সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড়

সিরাজগঞ্জে মাদ্রাসা মাঠে খেলনা বন্দুক হাতে ছাত্র, সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড়

ডিসে ১৬, ২০২৪

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় একটি মাহফিলে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বপালনকারী এক মাদ্রাসা ছাত্রের হাতে খেলনা বন্দুক দেখে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তবে জানা গেছে, সেটি ছিল একটি প্লাস্টিকের খেলনা বন্দুক।

কী ঘটেছিল

গত বৃহস্পতিবার শাহজাদপুর উপজেলার মোশাররফিয়া হাফেজিয়া ও ক্বওমী মাদ্রাসার মাঠে আয়োজিত মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাসুল (সা.)-এর ৪৩তম বংশধর সাইয়িদ শায়েখ নাসির বিল্লাহ আল মাক্কী। তিনি হেলিকপ্টারে মাহফিলে পৌঁছান। এ সময় ভিড়ের মধ্যে মো. নাইমুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে খেলনা বন্দুক হাতে দেখা যায়। ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে প্রশাসন।

কীভাবে বিতর্ক শুরু হলো

লেখক তসলিমা নাসরীন ও সাংবাদিক আরিফুজ্জামান তুহিন এ ছবিটি শেয়ার করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তসলিমা বন্দুকটি মারণাস্ত্র ভেবে মন্তব্য করেন, “বাংলাদেশি জিহাদিরা এখন মারণাস্ত্র হাতে মিছিল-মিটিং করছে।” অপরদিকে সাংবাদিক আরিফুজ্জামান বন্দুকটি আধুনিক রাইফেল বলে দাবি করেন।

সত্য উদঘাটন

তদন্তে জানা যায়, নাইমুল তার ছোট বোন সুমাইয়ার জন্য মাঠের পাশে একটি অস্থায়ী দোকান থেকে ২২০ টাকায় খেলনা বন্দুকটি কিনেছিলেন। তিনি সেটি নিয়ে ভিড়ের মধ্যে ঘোরাঘুরি করেন। নাইমুল সমকালকে জানান, “বন্দুকটি ভেঙে গিয়েছিল, তাই উপরে ধরে রেখেছিলাম। তবে ভিডিও কে করেছে, তা জানি না।”

পুলিশের অবস্থান

শাহজাদপুর থানার ওসি মো. আসলাম আলী জানান, প্রথমে পরিস্থিতি বিব্রতকর ছিল। তবে নিশ্চিত হওয়া গেছে, বন্দুকটি ছিল প্লাস্টিকের খেলনা। এ কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মুচলেকা নিয়ে নাইমুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলেন, “ছবিতে দেখা বন্দুকটি এবং জব্দ করা বন্দুকটি একই, যা খেলনা। এটি সত্যিকারের অস্ত্র হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতো।”

ঘটনার সত্য উদঘাটন হলেও সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের কারণে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। প্রশাসন সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন এ ধরনের ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়।

Leave a Reply