ওয়ানডের সূর্য ডুবিয়ে বছর শেষ
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা নিয়ে ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার শেষ করেছে। ব্যাটিংবান্ধব সেন্ট কিটসের উইকেটে শেষ ম্যাচে ৩২১ রানের বিশাল স্কোর করেও চার উইকেটে হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। এটি টানা তৃতীয় ওয়ানডে সিরিজ, যেখানে বাংলাদেশ আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কৌশল ও বাংলাদেশের ব্যর্থতা
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক শক্তির জায়গা পেস বোলিং হলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ কৌশলগতভাবে ব্যাটিংবান্ধব উইকেট তৈরি করে সফরকারীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবালসহ বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতিতে ব্যাটিং লাইনআপ ছিল অনভিজ্ঞ এবং দুর্বল। পেস বোলাররা কিছুটা কার্যকর হলেও স্পিন আক্রমণ ছিল বেশ হতাশাজনক। মেহেদী হাসান মিরাজ ও রিশাদ হোসেন বিদেশের মাটিতে প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হন।
শেষ ম্যাচের চিত্র
শেষ ম্যাচে সৌম্য সরকার, জাকের আলী, এবং মাহমুদউল্লাহ ব্যাট হাতে ভালো পারফর্ম করলেও বোলাররা বড় স্কোর রক্ষা করতে পারেননি। ৩২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫ বল হাতে রেখেই ৩২৫ রান করে সহজ জয় তুলে নেয়। ক্যারিবীয় ব্যাটারদের বড় ইনিংস ও জুটির দক্ষতার কাছে বাংলাদেশি বোলাররা ছিলেন অসহায়।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, “আমাদের বোলারদের জন্য খুব কঠিন দিন ছিল। মাঝের ওভারে উইকেট নিতে না পারা আমাদের জন্য বড় সমস্যা। তবে ব্যাটাররা ভালো করেছে, যা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক।”
২০২৪ সালের পারফরম্যান্সের সারাংশ
২০২৪ সালজুড়ে বাংলাদেশের ওয়ানডে পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। ৯টি ম্যাচের মধ্যে জয় এসেছে মাত্র তিনটিতে। বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় পেলেও আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হার এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশের সামগ্রিক ফর্মের পতন নির্দেশ করে।
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে বাংলাদেশের জন্য ওয়ানডে ফরম্যাটে উন্নতি করা অত্যন্ত জরুরি। অধিনায়ক মিরাজ জানিয়েছেন, “আমরা জানি আমাদের কোথায় উন্নতি প্রয়োজন। আশা করি, এগিয়ে যাওয়ার পথে আমরা সেসব জায়গায় মনোযোগ দিতে পারব।”
বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য নতুন বছর হবে চ্যালেঞ্জ ও উন্নতির সুযোগের বছর। টিম ম্যানেজমেন্টকে দলের দুর্বলতা কাটিয়ে ফর্ম ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।