
২০৩০ ও ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক ঘোষণা করল ফিফা
ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা একসঙ্গে দুটি বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ঘোষণা করেছে। ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার ৬টি দেশ, আর ২০৩৪ বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করবে সৌদি আরব। আজ (১২ ডিসেম্বর) ফিফার ভার্চ্যুয়াল কংগ্রেসে সদস্যদেশগুলোর ভোটে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।
২০৩০ বিশ্বকাপ: শতবর্ষ উদ্যাপনের বিশেষ আয়োজন
২০৩০ সালে ফিফা বিশ্বকাপের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজক হিসেবে স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কোকে মূল আয়োজক হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিশেষভাবে, প্রথমবারের মতো উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা এবং প্যারাগুয়ে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী তিনটি ম্যাচ আয়োজন করবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, উরুগুয়ে ১৯৩০ সালে প্রথম ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। শতবর্ষ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এই তিনটি দেশ যৌথ আয়োজক হতে চেয়েছিল, কিন্তু পরে মূল আয়োজনের দায়িত্ব স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কোর কাছে হস্তান্তর করে।
২০৩৪ বিশ্বকাপ: সৌদি আরবের অভিষেক
২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে সৌদি আরবকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি এশিয়ার চতুর্থ এবং মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করবে। এর আগে কাতার ২০২২ সালে এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান ২০০২ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল।
ভোটাভুটির প্রক্রিয়া
ভার্চ্যুয়াল কংগ্রেসে ফিফার ২১১টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। দুটি বিশ্বকাপের আয়োজক চূড়ান্ত করতে আলাদা দুটি ভোট হয়।
- ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কোর নাম প্রস্তাবিত হয় এবং সমর্থন পায়।
- ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে সৌদি আরবকে চূড়ান্ত করা হয়।
কংগ্রেসে উত্থাপিত প্রস্তাবিত নামগুলোর বাইরের কোনো নাম ছিল না। প্রস্তাবিত আয়োজক দেশের প্রতি সমর্থন জানাতে প্রতিনিধিদের হাততালি দিতে বলা হয়, যা ভোট হিসেবে গণ্য করা হয়।
আলোচনা ও সমালোচনা
২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক চূড়ান্ত হওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সৌদি আরবের মানবাধিকার এবং শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অনেক দেশ ও সংস্থা।
নরওয়ে ভোটদানে বিরত ছিল। তবে এর কারণ আয়োজক দেশ নয়, বরং বিডিং প্রক্রিয়ার প্রতি আপত্তি। সুইজারল্যান্ডও ভোটের আগে আপত্তি জানিয়ে বিষয়টি আলোচনায় তোলার অনুরোধ করে।
৪৮ দলের একক আয়োজন
২০৩৪ বিশ্বকাপ হবে ৪৮ দলের অংশগ্রহণে কোনো একক দেশের প্রথম আয়োজন। এর আগে ২০৩০ ও ২০২৬ বিশ্বকাপ ৪৮ দলের হলেও তা হবে একাধিক দেশের যৌথ আয়োজনে।
ফিফার এই সিদ্ধান্ত ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুটি বিশ্বকাপের আয়োজক একসঙ্গে চূড়ান্ত করার নজির স্থাপন করল।