মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা, প্রাণ গেল দু’জনেরই
গাজীপুরের শ্রীপুরে মর্মান্তিক এক ঘটনা ঘটেছে। স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে এক মা এক বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকায় ঢাকা-জামালপুর রেললাইনে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন নাসরিন আক্তার (২৬) ও তাঁর একমাত্র কন্যা রওজাতুল জান্নাত রাফসা। নাসরিন গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাঁর বিয়ে হয়েছিল ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার টাঙ্গাব গ্রামের বাসিন্দা রাসেল আহমেদের সঙ্গে। তারা শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। রাসেল স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, নাসরিন সকাল থেকে সাতখামাইর রেলস্টেশনের কাছে একটি আমগাছের নিচে শিশুকে নিয়ে বসে ছিলেন। তিনি ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন এবং বারবার কাঁদছিলেন। এক পর্যায়ে শিশুকন্যাকে বুকে জড়িয়ে ধরে মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন। নাসরিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। ট্রেনের ধাক্কায় শিশুটি রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়ে। স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটিও মারা যায়।
নাসরিনের স্বামী রাসেল আহমেদ জানিয়েছেন, সামান্য বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছিল। কয়েক দিন ধরে তিনি কাজে যাচ্ছিলেন না, এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে ঘরে না পেয়ে ফোন দেন। নাসরিন ফোনে বলেন, “রাফসাকে নিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। আর কোনোদিন দেখা হবে না।” এরপর নাসরিন ফোন কেটে দেন।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
এ ঘটনা এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে। সবাই মর্মাহত এবং হতবাক। পরিবারগুলোর মধ্যে স্বাভাবিক পারিবারিক সমস্যাগুলো এমন মর্মান্তিক পরিণতি যেন না ডেকে আনে, সে ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।