কারখানার মেঝে খুঁড়ে পাওয়া গেল নিখোঁজ ব্যবসায়ীর লাশ
নিখোঁজের চার দিন পর রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের একটি কারখানার মেঝে খুঁড়ে নূরে আলম (৫৭) নামে এক ব্যবসায়ীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
হত্যাকাণ্ডের পটভূমি
নূরে আলম কামরাঙ্গীরচরের হাসাননগরে একটি স্ক্রিন প্রিন্টের কারখানার মালিক ছিলেন। পরিবার জানিয়েছে, ৫ ডিসেম্বর রাতে স্ত্রী রাশিদা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় তিনি বাড়ি যাওয়ার কথা জানান। তবে পরদিন থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে ব্যর্থ হয়ে ৭ ডিসেম্বর জামাতা আতাউল্লাহ খান সজীব কামরাঙ্গীরচর থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, নূরে আলম সর্বশেষ তাঁর কারখানায় অবস্থান করেছিলেন। এর ভিত্তিতে কারখানার কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে এবং জানায়, লাশ কারখানার মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়েছে।
হত্যার কারণ
৬ ডিসেম্বর ভোরে কারখানার কর্মচারীরা ভেতরে বসে জুয়া খেলছিল। এটি দেখে নূরে আলম তাদের নিষেধ করলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে কর্মচারীরা তাঁর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এরপর ছুরিকাঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ দুই টুকরো করা হয়। মরদেহ গোপন করতে মেঝেতে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হয় এবং সেই স্থানটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয়।
অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার
পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডে চার কর্মচারী জড়িত। এর মধ্যে মিরাজ, রিফাত ও আফজালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তদন্তের অগ্রগতি
পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। তুচ্ছ ঘটনায় এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, অভিযুক্তরা মাদকাসক্ত কিনা, তা যাচাই করা হচ্ছে।
এ ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে শোক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।