দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন নোবেলজয়ী সাহিত্যিক হান ক্যাং
দক্ষিণ কোরিয়ার চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির নোবেলজয়ী সাহিত্যিক হান ক্যাং। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজের মর্মাহত অবস্থার কথা জানান।
হান ক্যাংয়ের মন্তব্য
হান বলেন,
“অনেক কোরীয় নাগরিকের মতো আমিও গভীরভাবে মর্মাহত। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রতি আমার দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, সামরিক শাসনের বর্তমান পরিস্থিতি তাকে ১৯৭৯-৮০ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে। সেই সময়ের সামরিক শাসনের প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি ব্যাপক পড়াশোনা করেছেন এবং সেসময়ের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কাজ করেছেন।
স্মৃতিচারণ: গোয়াংঝু গণহত্যা
হান ক্যাং তার জন্মস্থান গোয়াংঝুতে ১৯৮০ সালে সামরিক শাসন চলাকালীন ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন।
- ছাত্র আন্দোলন দমন: সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রের দাবিতে ছাত্রদের নেতৃত্বে চলা বিক্ষোভে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে।
- সহিংসতা: সেনারা প্যারাসুট থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের ওপর ছুরিকাঘাত এবং নির্বিচার গুলিবর্ষণ চালায়। এতে হাজারো মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
তিনি বলেন,
“আমার পরম সৌভাগ্য, আমি সেই সময়ের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছি। আর এখন, ২০২৪ সালের সামরিক শাসন প্রত্যক্ষ করছি।”
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি
গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট আকস্মিকভাবে সামরিক শাসন জারির ঘোষণা দেন। তবে দেশজুড়ে সমালোচনা এবং চাপের মুখে তিনি সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন।
উদ্বেগের কারণ
হান ক্যাংয়ের মতে, সামরিক শাসন কেবল গণতন্ত্রকেই বিঘ্নিত করে না, বরং তা মানুষের মৌলিক অধিকারেও আঘাত হানে। তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং কোরীয় নাগরিকদের মতো তিনিও দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সামরিক শাসন বরাবরই একটি সংবেদনশীল ইস্যু। হান ক্যাংয়ের মতো ব্যক্তিত্বের সরব হওয়া দেশটির বর্তমান সংকটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।