December 23, 2024
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে না সরালে বড় বিপদ হতে পারে, বললেন দলের প্রধান

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে না সরালে বড় বিপদ হতে পারে, বললেন দলের প্রধান

ডিসে ৬, ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল সামরিক আইন জারি করে নিজেকে রক্ষার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর প্রতি সমর্থনের হার দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে এবং বিরোধী দল অভিশংসনের জন্য পার্লামেন্টে ভোটাভুটি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পরিস্থিতির বিবরণ

১. সামরিক আইন জারি ও রাজনৈতিক নেতাদের আটক:

  • প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল সম্প্রতি সামরিক আইন জারি করেন এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে আটক করার নির্দেশ দেন।
  • পিপল পাওয়ার পার্টির প্রধান হান ডং হুন দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপ দক্ষিণ কোরিয়ার গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

২. জনসমর্থনের হ্রাস:

  • গ্যালাপ কোরিয়ার সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট ইউনের প্রতি জনসমর্থন মাত্র ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা তাঁর প্রশাসনের স্থিতিশীলতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।
  • সামরিক আইন জারির প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে।

৩. বিরোধী দলের অভিশংসন উদ্যোগ:

  • ছয় দলের বিরোধী জোট প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার জন্য পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
  • অভিশংসনের ভোট আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হতে পারে।

৪. ক্ষমতাসীন দলের অবস্থান:

  • ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি অভিশংসনের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে দলের অভ্যন্তরেও বিভাজন রয়েছে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

৫. প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ:

  • সামরিক আইন জারির ঘটনার পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন পদত্যাগ করেছেন।
  • নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে সৌদিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত চোই বিয়াং-হিয়াককে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

প্রভাব ও বিশ্লেষণ

  • গণতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জ:
    সামরিক আইন জারি ও রাজনৈতিক নেতাদের আটকের নির্দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থার সংকট তৈরি করেছে।
  • জনমনে উত্তেজনা:
    জনসমর্থনের হার কমে যাওয়ায় প্রেসিডেন্টের শাসন ব্যবস্থা আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
  • বিরোধী দলের ভূমিকা:
    বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ অভিশংসন প্রচেষ্টা প্রেসিডেন্ট ইউনকে আরও চাপের মুখে ফেলেছে। তবে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন ছাড়া অভিশংসন কার্যকর হবে না।
  • আন্তর্জাতিক প্রভাব:
    দক্ষিণ কোরিয়ার স্থিতিশীলতা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

পরবর্তী দিনগুলোতে পার্লামেন্টের অভিশংসন প্রস্তাব এবং প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপ দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। এই সংকট উত্তরণের জন্য সরকারের আরও গণতান্ত্রিক ও সমঝোতাপূর্ণ পথে হাঁটা জরুরি।

Leave a Reply