আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও মশালমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৃথক কর্মসূচি পালন করে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’ এবং ‘আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা’।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মশালমিছিল
সন্ধ্যা সাতটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সঞ্জীব চত্বর থেকে মশালমিছিল শুরু করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করে।
- দাবি:
- ভারতসহ আধিপত্যবাদী দেশগুলোর সঙ্গে হওয়া অসম চুক্তি প্রকাশ ও বাতিল।
- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে শান্তিরক্ষা মিশন পাঠানোর প্রস্তাবের জন্য ক্ষমা চাওয়া।
- বক্তারা:
- জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, “আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা আমরা নিজেরাই মোকাবিলা করব। ভারত, আমেরিকা বা অন্য কোনো দেশের এতে হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই।”
- ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, “ভারতের আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের নয়। সীমান্তে যেমন ফেলানী আছে, তেমনই স্বর্ণা দাসও আছে। অভিন্ন নদীগুলোর ওপর ভারতের বাঁধের কারণে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবার ক্ষতি হচ্ছে।”
আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার মশালমিছিল
এর আগে রাজু ভাস্কর্যে আরেকটি বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশালমিছিল করে ‘আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা’।
- দাবি:
- আগরতলায় হামলার নিন্দা।
- ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ।
- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য প্রত্যাহার।
- বক্তারা:
- ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, “ভারত বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক আধিপত্য পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছি। কারও গোলামি করব না।”
- অন্যান্য বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধিকার রক্ষায় ছাত্র-জনতার ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মিছিল ও সমাবেশের সমাপ্তি
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মিছিল রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। অন্যদিকে, আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার মশালমিছিল শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।
উপস্থিত ব্যক্তিত্বরা
বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের নেতারা, যেমন ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আহমেদ ইসহাক, এবং নাগরিক ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় তাদের সক্রিয় অবস্থানকে তুলে ধরে।