বিদ্রোহীরা এগোচ্ছে, আলেপ্পো থেকে সরে গেল সিরিয়ার সৈন্যরা
সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোতে বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রার মুখে সরকারি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা ইতোমধ্যে আলেপ্পোর কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি:
- বিদ্রোহীদের অগ্রগতি: বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো আলেপ্পো শহরের ‘বড় অংশে’ ঢুকে পড়েছে। তাদের মধ্যে তুরস্ক-সমর্থিত জিহাদি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং সহযোগী গ্রুপগুলো নেতৃত্ব দিচ্ছে।
- সরকারি প্রতিক্রিয়া: সিরিয়ার সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের প্রবেশ স্বীকার করলেও পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
- মানবিক পরিস্থিতি: লড়াইয়ের শুরু থেকে অন্তত ২০ জন বেসামরিক নাগরিকসহ তিনশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রাণ বাঁচাতে শহর ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ, ফলে আলেপ্পোর বাইরে যানজট তৈরি হয়েছে।
আসাদ সরকারের অবস্থান:
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বলেছেন, “সন্ত্রাসীদের আক্রমণ যতই জোরালো হোক, আমাদের বন্ধু ও সহযোগীদের সহায়তায় তাদের পরাজিত করা সম্ভব।” তিনি দেশের স্থিতিশীলতা ও ভৌগোলিক সংহতি রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বিদ্রোহীদের কার্যক্রম:
- বিদ্রোহীরা আলেপ্পো বিমানবন্দর এবং আশেপাশের এক ডজন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
- কারফিউ জারি করেছে, যা রোববার পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
- ২০১৬ সালে আলেপ্পো সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেলেও এবারের আক্রমণ বিদ্রোহীদের জন্য বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়ার ভূমিকা:
রাশিয়ার বিমান বাহিনী বিদ্রোহীদের দমনে আলেপ্পোতে হামলা চালিয়েছে। গৃহযুদ্ধের সময় আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
২০১১ সালে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এ পর্যন্ত অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। ২০১৬ সালে আলেপ্পো শহর বিদ্রোহীদের হাত থেকে পুনর্দখল করে সরকারি বাহিনী। তবে ২০২০ সালের যুদ্ধবিরতির পর সংঘাত অনেকটা স্তিমিত হলেও ইদলিব এবং আশেপাশের এলাকায় বিদ্রোহীরা শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছে।
এই সংঘাত সিরিয়ার রাজনৈতিক ও মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলছে। আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিদ্রোহী এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান লড়াই দেশটিকে নতুন করে অস্থিতিশীলতার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।