৫০ বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তির ওপর হামলা!
ময়মনসিংহের বড়বাজারে ব্যবসায়ী ফণীভূষণ ধরের নাতি সুরজিত ধর পিপলুর ওপর হামলার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। ২৬ অক্টোবর রাত ৮টা ১৩ মিনিটে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
ঘটনার বিবরণ
ফণীভূষণ ট্রেডার্সে বসে থাকা সুরজিত ধর পিপলুর ওপর হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একে সাম্প্রদায়িক নিপীড়ন দাবি করে শেয়ার করা হয়। পোস্টে বলা হয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করে তাদের ব্যবসা বন্ধের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন।
স্থানীয় সূত্রের দাবি:
পূজার চাঁদা নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত।
- পূজার চাঁদা তুলতে এসে রবিউল আওয়াল বাবলুর দোকানের কর্মচারী সুজিত দাসের সঙ্গে সুরজিত পিপলুর কথাকাটাকাটি হয়।
- পিপলু দাবি করেন, বাবলুর দোকানের ম্যানেজার রিপন দাসের কাছে টাকা পাওনা রয়েছে। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে পিপলু সুজিতের গেঞ্জির কলার ধরে টান দেন।
- এরপর রবিউল আওয়াল বাবলুর ছেলে বান্টি এবং তাঁর কর্মচারীরা ফণীভূষণের দোকানে এসে পিপলুকে মারধর করেন।
ভিডিও ফুটেজ:
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বাবলু এবং তাঁর ছেলে বান্টি পিপলুকে আঘাত করছেন। এছাড়া রিপন নামে একজন চেয়ার দিয়ে পিপলুকে আঘাত করেন।
পুলিশ ও ব্যবসায়ী সমিতির বক্তব্য
- কোতোয়ালি থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান:
এই ঘটনায় কোনো সাম্প্রদায়িক উপাদান নেই। এটি দু’পক্ষের ব্যবসায়িক বিরোধ। - বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতি:
ঘটনার সুরাহার জন্য সালিশ করা হয়েছিল। তবে মামলার কারণে সমাধান হয়নি।
মামলা ও বর্তমান অবস্থা
- ২৭ অক্টোবর দু’পক্ষই কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করে।
- ৩০ অক্টোবর মামলার আসামিরা আদালত থেকে জামিন পান।
আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজের দাবি নিয়ে বিতর্ক
আওয়ামী লীগের পেজ থেকে এ ঘটনাকে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, এটি সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয়।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে এমন প্রচারণার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। একই সঙ্গে, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন জরুরি।