নভেম্বরেই ভর্তি ১ হাজার ৫৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী
প্রবন্ধটির বিশ্লেষণ করলে, ঢাকা শহরের মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হয়েছে:
১. ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও আক্রান্তদের সংখ্যা
- ২০২৪ সালের এ বছর ঢাকার মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালে ৪,৩৪৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন, যা মোট ভর্তি রোগীর ৩৬%।
- নভেম্বর মাসের ২৫ দিনেই ১,৫৬৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।
- হাসপাতালটি ঢাকার সবচেয়ে বড় ডেঙ্গু চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে, তবে মৃত্যুর দিক থেকে এটি চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মুগদা মেডিকেল কলেজ, এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
২. হাসপাতালের প্রস্তুতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা
- মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালটি বিশেষভাবে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত (ডেডিকেটেড) হাসপাতাল, যেখানে ৩০০ শয্যা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
- বর্তমানে সেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪৭ জন, তবে হাসপাতালের শয্যার বেশিরভাগ এখনও ফাঁকা রয়েছে, যা হাসপাতালের কার্যক্ষমতা ও সেবা প্রদান সক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত দেয়।
- হাসপাতালটি ১,০৫৪টি শয্যার মধ্যে ৩০০টি শয্যা ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রেখেছে এবং বর্তমানে সেখানে ৭১ জন চিকিৎসক ও ৮০ জন নার্স সেবা প্রদান করছেন।
৩. হাসপাতালের পরিবেশ ও রোগী সন্তুষ্টি
- রোগীদের জন্য শয্যা খুব একটা ভরা নয় এবং অন্যান্য হাসপাতালের মতো এখানে ভিড় বা মেঝেতে রোগী ভর্তি হওয়ার পরিস্থিতি নেই। পরিবেশও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, যা চিকিৎসার মান এবং রোগীদের সন্তুষ্টির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
- কিছু রোগী, যেমন তানজিদা আক্তারের মা, হাসপাতালে সেবা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এর মাধ্যমে হাসপাতালের চিকিৎসা ও সেবার মানের প্রশংসা করা হয়েছে।
৪. ডেঙ্গু রোগীর জন্য বিশেষত শয্যার সংখ্যা ও সুবিধা
- হাসপাতালের শয্যা ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী, ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য ৩০০টি শয্যা প্রস্তুত, যেখানে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা এর অর্ধেকেরও কম। এই শয্যাগুলোর অনেকেই এখনো ফাঁকা রয়েছে, যা সেবার পর্যাপ্ততা এবং আরও রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা নিশ্চিত করে।
- আক্রান্ত ব্যক্তিরা এখানকার সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট, এবং সেবা পেতে কোনো বাধা বা অবহেলা নেই।
৫. অবস্থান ও রোগীদের উৎস
- মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীরা মূলত তেজগাঁও, নাখালপাড়া, মহাখালী, কুড়িল-বিশ্বরোডসহ অন্যান্য ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন। কিছু রোগী ঢাকার বাইরে থেকেও চিকিৎসা নিতে আসেন, বিশেষত যারা অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেননি।
৬. বিশেষ শয্যা ও চিকিৎসা সুবিধা
- হাসপাতালটিতে ৬টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে, যা গুরুতর রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ডেঙ্গু সম্পর্কিত সব পরীক্ষাই হাসপাতালের অভ্যন্তরে করা সম্ভব, তবে কিছু পরীক্ষার জন্য বাহিরে পাঠানো হতে পারে।
এটি একটি ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরে যে, মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতাল ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত শয্যা, সেবা, এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করেছে, ফলে রোগীরা এখানে এসে ভালো সেবা পাচ্ছেন। তবে, হাসপাতালের শয্যার বেশিরভাগ ফাঁকা থাকা, বিশেষ করে ডেঙ্গুর মতো মহামারি সময়ে, বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দেয়। যেমন, রোগীদের সঠিক সংখ্যা এবং আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আরও কার্যকর প্রচেষ্টা কি দরকার ছিল?
এই ধরনের প্রস্তুতির পাশাপাশি, আরও সুসংগঠিত সমন্বয় এবং অন্য হাসপাতালগুলোর জন্য অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করা গেলে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটতে পারে।