ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান, নিহত ৫
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে পাকিস্তানে তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের ডাকা বিক্ষোভে রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে চারজনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এছাড়া, আহত হয়েছেন শতাধিক পুলিশ সদস্য এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
বিক্ষোভের কারণ:
পিটিআই ও তার নেতা ইমরান খান পাকিস্তানে সরকারের পদত্যাগ এবং তার মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে। ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর থেকেই তার দল এবং সমর্থকরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে।
সংঘর্ষ ও হতাহত:
পিটিআই নেতাকর্মীরা ইসলামাবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ ও মিছিলের ডাক দেয়, তবে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের প্রতিহত করতে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। শ্রীনগর মহাসড়কে দুষ্কৃতকারীরা রেঞ্জার্স বাহিনীর সদস্যদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে চারজন প্যারাট্রুপার এবং একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। এছাড়া, অন্যান্য সংঘর্ষে আরও পুলিশ সদস্যসহ ৬ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন, যার মধ্যে অধিকাংশের অবস্থা গুরুতর।
ইসলামাবাদে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
পাকিস্তানের সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে অত্যন্ত কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করে সমস্ত ধরনের জমায়েত ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাজধানী এবং আশপাশের এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীকে গা-ভর্তি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা যেকোনো অশান্তির চেষ্টা এবং জঙ্গি তৎপরতা কঠোর হাতে দমন করে।
পিটিআই নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধ:
তবে এইসব বিধিনিষেধ সত্ত্বেও পিটিআই নেতা-কর্মীরা ইসলামাবাদে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে এবং তাদের গাড়িবহর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। সরকার বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন চালাতে শুরু করেছে, যার মধ্যে পিটিআইয়ের পাঁচ পার্লামেন্ট সদস্যসহ প্রায় ৪ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি:
পাকিস্তানের রাজনীতি বর্তমানে এক কঠিন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে একদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তীব্র সংঘর্ষ চলছে। দেশটির সরকারের পদত্যাগ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি দাবিতে চলা আন্দোলনটি যে আরও তীব্র হতে পারে, তা স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।
এছাড়া, পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের উত্তেজনার মাত্রা আরো বাড়তে পারে যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসে, এবং দেশটির সরকার এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ আরও গভীর হয়।