নুহাশ হুমায়ূনের সিনেমার ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ বাতিল
চার বছর আগে, বাংলাদেশের জনপ্রিয় নির্মাতা নুহাশ হুমায়ূন তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা মুভিং বাংলাদেশ এর ঘোষণা দিয়েছিলেন, যা দেশী-বিদেশী নানা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনায় এসেছিল। তবে সম্প্রতি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে এই সিনেমার জন্য বরাদ্দকৃত ৫০ লাখ টাকার বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর সিনেমাটির প্রযোজকরা জানিয়েছেন, এটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো বড় বাধা সৃষ্টি করবে না।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমির প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “এ মুহূর্তে সিনেমাটি নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা নেই। সিনেমা বানানো মন্ত্রণালয়ের কাজও নয়, তাই আপাতত এই প্রকল্প থেকে সরে আসা হয়েছে।”
প্রযোজক আরিফুর রহমান মনে করছেন, মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ বাতিল হলেও সিনেমার নির্মাণে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। তিনি বলেন, “একটা সিনেমা তৈরিতে আমাদের তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগে। এই দীর্ঘ সময়ে প্রযোজকের কাজ হলো ফান্ড রাইজিং, এবং বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন কারণে আসে-যায়। ৫০ লাখ টাকা সিনেমার জন্য খুবই ছোট অঙ্ক, এর কারণে সিনেমার নির্মাণে কোনো সমস্যা হবে না।”
নুহাশ হুমায়ূন জানিয়েছেন, তিনি সিনেমার চিত্রনাট্য এবং গল্পে বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছেন। তার মতে, “যতক্ষণ গল্প ও চিত্রনাট্য ঠিকঠাক থাকে, ততক্ষণ চিন্তা করার কিছু নেই। আমি শর্টফিল্ম, ওয়েব কাজ করেছি, কিন্তু এটি আমার প্রথম ফিচার ফিল্ম।”
মুভিং বাংলাদেশ সিনেমাটি প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক উৎসব থেকে সমর্থন পেয়েছে। এতে প্রথম বড় সাহায্য আসে তাইওয়ান থেকে, যেখানে তাইপে ফিল্ম কমিশন থেকে ৮৯,৮০০ ডলার অনুদান পেয়েছিল। এরপর এটি টোকিও গ্রান্ট ফাইনান্সিং মার্কেট, কান চলচ্চিত্র উৎসবের মার্শে দ্যু ফিল্ম বাজার, লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসব ও ভারতের ফিল্ম বাজার থেকেও সহায়তা পেয়েছে।
এখন পর্যন্ত সিনেমাটির শুটিং পরিকল্পনা ঠিকঠাক শুরু হয়নি, কারণ নুহাশ জানান, চিত্রনাট্যের কাজ সম্পূর্ণ হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে তিনি আশাবাদী যে আন্তর্জাতিক ফান্ডিং এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এই সিনেমা বাস্তবায়িত হবে।
এভাবে, মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ সরে গেলেও মুভিং বাংলাদেশ নির্মাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, এবং এটি নির্মাতার দৃঢ় মনোবলের প্রতিফলন।