December 23, 2024
নতুন সিইসি হলেন সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন

নতুন সিইসি হলেন সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন

নভে ২১, ২০২৪

এই সংবাদটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেওয়া কর্মকর্তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়ার ন্যায়নিষ্ঠতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য তাদের পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে বিশ্লেষণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হল:

১. নিয়োগ প্রক্রিয়া ও নির্বাচন

  • প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে এ এম এম নাসির উদ্দীনের নিয়োগ এবং তার পূর্বের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা লক্ষ্যযোগ্য। তিনি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে কাজ করেছেন এবং ২০০৯ সালে অবসর গ্রহণ করেছেন।
  • তার নাম বিএনপি প্রস্তাবিত তালিকায় ছিল, যা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ন, কারণ বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল এবং তাদের প্রস্তাবিত নামের প্রভাব নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার প্রতি প্রশ্ন তুলে। এই নিয়োগের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবনার গুরুত্ব উঠে আসে এবং এটা বোঝায় যে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক সমঝোতা ও অংশগ্রহণের প্রয়োজন।

২. কমিশনারদের নিয়োগ

  • চার নতুন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন প্রশাসনিক এবং বিচারিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ।
    • মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ছিলেন অতিরিক্ত সচিব।
    • আবদুর রহমানেল মাসুদ ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ।
    • তাহমিদা আহমদ ছিলেন সাবেক যুগ্ম সচিব।
    • আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।
  • তাদের নিয়োগ নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও সুশাসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হতে পারে, কারণ এই ব্যক্তিরা তাদের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন এবং তারা নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও পেশাদার হিসেবে কাজ করতে সক্ষম।

৩. বিএনপির ভূমিকা

  • বিএনপির দেয়া প্রস্তাবিত তালিকা থেকে এ এম এম নাসির উদ্দীনের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া রাজনৈতিক প্রসঙ্গ সৃষ্টি করেছে। বিএনপি এবং তার মিত্র দলগুলোর তালিকায় যাদের নাম ছিল, তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পক্ষ থেকে তাদের পছন্দের মানুষদের নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা সাধারণত সরকারের এবং বিরোধী দলের মধ্যে সম্পর্কের প্রতিফলন।
  • তবে, শফিকুল ইসলাম নামটি বাদ পড়েছে, যা বিএনপি ও সরকারের মধ্যে মতবিরোধের ইঙ্গিত হতে পারে। এর ফলে নির্বাচন কমিশনের নতুন কমিটি রাজনৈতিক চাপে কীভাবে কাজ করবে তা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

৪. নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা

  • নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ। যেহেতু নির্বাচন কমিশন জনগণের ভোটাধিকারের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করে, এই নিয়োগের প্রক্রিয়া জাতীয় নির্বাচনগুলোতে আরও দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে পারে, তবে এর জন্য রাজনৈতিক পক্ষ থেকে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার ওপর নজর রাখা অপরিহার্য।
  • যদি বিএনপির প্রস্তাবিত নামগুলির মধ্যে কোনো বিতর্ক থাকে, তবে তা নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে, বিশেষত নির্বাচন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে।

৫. নতুন কমিটির চ্যালেঞ্জ

  • নতুন সিইসি এবং কমিশনারদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে, বিশেষ করে তাদের দায়িত্বশীলতা, স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব এবং সরকারের সিদ্ধান্তের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে হবে, যাতে নির্বাচন কমিশন কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে এবং নির্বাচনের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ থাকে।
  • কমিশনটির পেশাদারিত্ব এবং নির্বাচনী আইন বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জনগণের আস্থা এবং ভোটারদের অংশগ্রহণ নির্ভর করবে।

নিয়োগ প্রক্রিয়া, নির্বাচনী আইনের বাস্তবায়ন এবং কমিশনের স্বাধীনতা, প্রতিটি দেশেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে এই নিয়োগটি, বিশেষ করে রাজনৈতিক পটভূমিতে, নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ এবং আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিইসি এবং কমিশনারদের নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাদের সততা, দক্ষতা, এবং পেশাদারিত্বের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

Leave a Reply