December 23, 2024
জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

নভে ২১, ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন, যেখানে তিনি দেশের জনগণের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও প্রতিজ্ঞা জানিয়েছেন। ঢাকা সেনানিবাসে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পররাষ্ট্রনীতিতে সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখবে এবং তার ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা।

তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেন দেশের জনগণই সত্যিকার অর্থে সকল ক্ষমতার উৎস হয়।” এই মন্তব্যটি দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের শক্তি প্রতিফলিত করে, যেখানে জনগণ তাদের অধিকার ও ক্ষমতার অধিকারী হবে।

ড. ইউনূস দেশের মানুষকে ধর্ম ও মতাদর্শের ভেদাভেদ ভুলে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবো, তারা আমাদের যে সুযোগ দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমরা দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে শপথ নিয়েছি।”

এছাড়া, তিনি মনে করেন যে দেশের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হবে, কিন্তু কোন মতের জন্য কাউকে শত্রু মনে করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, “কেউ তার মতের জন্য শত্রু হবে না, কেউ ধর্মের কারণে শত্রু হবে না। আমরা সবাই সমান, কেউ কারও ওপরে না এবং কেউ কারও নিচে না।” এটি একটি ঐক্যবদ্ধ জাতির গঠন ও জাতীয় ঐক্যের প্রতি তার দৃঢ় অঙ্গীকার।

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, ড. ইউনূস বলেন, তিনি সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ, যা মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য দেখেছিলেন—একটি বৈষম্যহীন, শোষণহীন এবং কল্যাণময় রাষ্ট্র।

তরুণ সমাজের উন্নয়নের প্রতি তার দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমাদের তরুণ সমাজ যেন মেধার ভিত্তিতে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে তিনি ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে সালাম জানান, এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

১৯৭১ সালে এই দিনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয়, যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিবছর সশস্ত্র বাহিনী দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়, যা দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতাকে স্মরণ করে।

ড. ইউনূসের এই বক্তব্যে দেশের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও দেশের উন্নয়নে দৃঢ় সংকল্প ফুটে উঠেছে, যেখানে জাতি একসাথে কাজ করে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।

Leave a Reply