যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে হিজবুল্লাহ
লেবানন-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি: আলোচনায় অগ্রগতি ও হামলার উত্তেজনা
লেবানন সরকার এবং দেশটির শীর্ষ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলমান থাকলেও, সোমবার ইসরায়েলের বিমান হামলায় লেবাননের রাজধানী বৈরুতে পাঁচজন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের হামলা টানা দ্বিতীয় দিনে বৈরুতে চালানো হয়, এবং হামলার পর থেকে দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
১. যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের আলোচনায় অগ্রগতি:
লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, তবে এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ–এর মধ্যে চলমান লড়াইয়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য হচ্ছে, লেবানন এবং ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের মাত্রা কমানো এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা। তবে, বৈরুতে হামলা এবং উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার কারণে এটি কার্যকর হওয়ার পথে আরও জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
২. ইসরায়েলের বিমান হামলা এবং হামলার পরিণতি:
যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর পরেও ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে পাঁচজন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছে। এছাড়া, হামলার কারণে দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন, এবং নিহতদের মধ্যে অনেকেই সাধারণ নাগরিক। বৈরুতে এই হামলা ইসরায়েলি বাহিনীর বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ–এর বিরুদ্ধে চালানো অব্যাহত আক্রমণের অংশ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
৩. হিজবুল্লাহর প্রতিক্রিয়া:
ইসরায়েলের আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কাজ অব্যাহত রেখেছে। এই ধরনের সশস্ত্র প্রতিক্রিয়া সংঘাতের মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে এবং যুদ্ধবিরতির চেষ্টাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
৪. যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা:
যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি চুক্তি বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে আরও একটি বিশেষ প্রতিনিধি পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। আমোস জে. হোচস্টেইন, যিনি প্রেসিডেন্টের বৈশ্বিক অবকাঠামো এবং জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ দূত, শিগগিরই বৈরু আসার কথা রয়েছে। তিনি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের চূড়ান্ত রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করবেন। তবে বৈরুতে অবস্থানরত ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাতের মধ্যকার বাস্তব পরিস্থিতি চূড়ান্ত সমঝোতার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৫. সংঘাতের বর্তমান পরিস্থিতি:
এখন পর্যন্ত লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজিত রয়েছে। একদিকে, ইসরায়েল হামলা চালাচ্ছে এবং অন্যদিকে হিজবুল্লাহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে। যুদ্ধবিরতি আলোচনা চললেও, পরিস্থিতির উত্তেজনা অনেক বেশি এবং এতে মানবিক ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। তাই এই মুহূর্তে লেবানন, ইসরায়েল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লেবানন এবং ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব এবং ইসরায়েলের বিমান হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত হলেও, ইসরায়েলি হামলা এবং ক্ষেপণাস্ত্র পাল্টা হামলার কারণে পরিস্থিতি এখনও শান্তিপূর্ণ সমাধান থেকে অনেক দূরে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও উদ্যোগ প্রয়োজন, যাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে এবং মানবিক দুরবস্থা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।