December 23, 2024
রবীন্দ্রনাথকে অবমাননা, যা বললেন সালমান খান

রবীন্দ্রনাথকে অবমাননা, যা বললেন সালমান খান

নভে ১৪, ২০২৪

সালমান খানের জীবনে সম্প্রতি নানা ধরনের সমস্যার স্রোত চলছে, যার মধ্যে বিভিন্ন আইনি জটিলতা এবং হুমকি সহ নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই মুহূর্তে তার ওপর চাপ বেড়েছে বিশেষত কৃষ্ণসার হত্যা মামলায় আদালতের ঝামেলা, লরেন্স বিষ্ণোই থেকে খুনের হুমকি, এবং নতুন একটি বিতর্ক—‘দ্য কপিল শর্মা শো’তে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবমাননা

এই বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে, যখন কপিল শর্মা শো-এর একটি পর্বে অভিনেত্রী কাজল উপস্থিত ছিলেন, এবং শোয়ের কৌতুকাভিনেতা ক্রুষ্ণা অভিষেক কবিগুরুর প্রখ্যাত গান “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে” এর অপব্যাখ্যা করেন। এই অপব্যাখ্যার জন্য তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদের সৃষ্টি করেছে। বিশেষত, কবি শ্রীজাত তার পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে দাবি করেন যে এই অপব্যাখ্যার মাধ্যমে একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি কবির প্রতি অবমাননা করা হয়েছে। এরপর বাংলা সংস্কৃতির পণ্ডিত ও শিল্পী মহল, এমনকি পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগপ্তও শ্রীজাতের সমর্থনে বক্তব্য দিয়েছেন।

এখন প্রশ্ন হলো, এই বিতর্কের মূল হোতা কে— কপিল শর্মা শো-এর প্রযোজক? বঙ্গবাসী মহাসভা ফাউন্ডেশনের অভিযোগ ছিল যে সালমান খানের প্রযোজনা সংস্থা এই শোয়ের সঙ্গে যুক্ত, এবং সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তারা সালমান খানকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিল। তবে, সালমান খানের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে তার প্রযোজনা সংস্থা এখনো এই শোয়ের সঙ্গে যুক্ত নয় এবং এই ধরনের নোটিশ সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণার ভিত্তিতে পাঠানো হয়েছে

তবে শ্রীজাত তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান যে, তিনি বা তার সংগঠন কোনো আইনি পদক্ষেপ নেননি এবং পুরো ঘটনা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণার ভিত্তিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। শ্রীজাত তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে এই প্রতিবাদ করেছেন এবং ভবিষ্যতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন, তবে তার মতে এ মুহূর্তে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

সালমান খান তার বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তার প্রযোজনা সংস্থা আর কপিল শর্মা শো-এর প্রযোজক নয়, এবং তাই এই আইনি নোটিশ তার জন্য প্রভাবিত করতে পারবে না। অপব্যাখ্যা বা অপমান সম্পর্কিত কোনো অভিযোগের ক্ষেত্রে, সালমানের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি ভ্রান্ত তথ্য হিসেবে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে অভিনেতা একটি প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করেছেন, যেখানে তিনি তাঁর সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন এবং বিতর্কে জড়ানো থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছেন।

বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি এই ধরণের অবমাননা নিয়ে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে মূলত একটি গভীর সাংস্কৃতিক সচেতনতা কাজ করছে। বিশেষত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তার সৃষ্টি সম্পর্কে কোনো অবমাননা বাংলা সমাজে বরদাস্ত করা হয় না। এই প্রেক্ষাপটে, কিছু মানুষ মনে করছেন যে কোনো রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দের কাছে আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে দায়বদ্ধতার দাবি করা উচিত। তবে, শ্রীজাতের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার কথা বলেছেন, যা পুরো ঘটনা নিয়ে আরো বেশি জটিলতা সৃষ্টি করেছে।

সালমান খানের বর্তমান পরিস্থিতি একদিকে যেমন তার ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন করছে, অন্যদিকে তিনি সাংস্কৃতিক বিতর্কেরও শিকার হয়েছেন। কপিল শর্মা শো-এ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবমাননা নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক, যেখানে সালমান খানকে আংশিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে, তা তার জন্য নতুন এক আইনি গেরো তৈরি করেছে। তবে, সালমান খান তার অবস্থান পরিষ্কার করে জানিয়েছেন যে তার প্রযোজনা সংস্থা এই শোয়ের সাথে এখন আর কোনো সম্পর্ক রাখে না, এবং আইনি নোটিশের কোন প্রভাব তার ওপর পড়বে না।

এখন সবার নজর থাকবে, এই বিতর্ক কিভাবে সামলানো হয় এবং কি ধরণের আইনি পদক্ষেপ গৃহীত হয়।

Leave a Reply