৯ মাস বন্ধের পর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ আবার শুরু হচ্ছে
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ ৯ মাস বন্ধ থাকার পর চলতি নভেম্বরের শেষে বা আগামী ডিসেম্বরের শুরুতে আবার শুরু হচ্ছে। তবে এই নির্মাণকাজে ইতালিয়ান থাই (ইতালথাই) ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি আর অংশ নেবে না। শেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে ব্যাংক ঋণ ছাড় না হওয়ায় অর্থসংকটে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এখন তা আবার শুরু হতে যাচ্ছে।
ইতালথাই, যাদের প্রকল্পের ৫১ শতাংশ শেয়ার ছিল, তারা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ঋণখেলাপি হয়ে পড়ে এবং শেয়ার হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলে এবং ২০ অক্টোবর শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের পক্ষেই রায় আসে। এর ফলে শেনডংয়ের শেয়ার ৩৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮৫ শতাংশে পৌঁছেছে এবং ইতালথাই প্রকল্প থেকে সরে গেছে।
এফডিইই লিমিটেড নামে একটি যৌথ কোম্পানি গঠন করা হয়েছিল এই প্রকল্পের জন্য, যেখানে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) প্রকল্পের নির্বাহী সংস্থা। এফডিইই কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে শেনডং, সিনো হাইড্রো এবং ইতালথাই ছিল, কিন্তু শেয়ার হস্তান্তরের পর ইতালথাইয়ের ভূমিকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পে আর্থিক সমস্যা ছিল। ইতালথাই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় চীনা ব্যাংকগুলো তাদের শেয়ার হস্তান্তরের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল, কিন্তু ইতালথাই রাজি হয়নি। এরপর ব্যাংক দুটি ঋণ ছাড় বন্ধ করে দেয়, এবং আইনি লড়াইয়ের পর শেয়ার হস্তান্তর সম্ভব হয়।
এফডিইইর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হবে এবং যেসব কর্মী ছুটিতে ছিলেন, তাদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেনডং কোম্পানি বর্তমানে নিজস্ব অর্থায়নে এক্সপ্রেসওয়ের হাতিরঝিল অংশে কিছু কাজ করছে, তবে ব্যাংক ঋণের অর্থ ছাড় না হওয়া পর্যন্ত বড় পরিসরে কাজ শুরু হবে না।
এই এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ ২০০৯ সালে শুরু হয়, তবে অর্থায়ন সমস্যা এবং নকশায় পরিবর্তনের কারণে এটি বিলম্বিত হয়। প্রকল্পের জন্য চুক্তি সংশোধন করে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল, ঢাকা শহরের যানজট কমানো এবং গাড়ি চলাচলের গতিবেগ বাড়ানো।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার কাওলা থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত একটি দ্রুতগতি সম্পন্ন উড়াল সড়ক তৈরি হবে, যা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।