জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো অর্থ আত্মসাৎ হয়নি: দুদক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিলের শুনানি শেষ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যিনি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া দশ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছিলেন, তার ওপর শুনানি আজ রোববার শেষ হয়েছে। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি শেষে আগামীকাল সোমবার এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য দিন রেখেছেন।
এদিন শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবীরা ছিলেন—জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আসিফ হাসান।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান আদালতে বলেন, “জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কোনো অর্থ আত্মসাৎ হয়নি।” তিনি উল্লেখ করেন, এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তরিত হলেও তাতে আত্মসাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং সেখানে কোনো টাকা খরচ করা হয়নি। তিনি মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র ও সাক্ষ্যের অংশ তুলে ধরে দাবি করেন, খালেদা জিয়া এই মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট নন।
এদিকে, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাদের দাবি তুলে ধরেন যে, রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন, তারপরও কেন আপিল শুনানি চলছে? তাদের দাবি, খালেদা জিয়া অপরাধ করেননি এবং তিনি কখনো ক্ষমা চাননি, বরং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আইনগতভাবে মোকাবিলা করতে আদালতে এসেছেন।
এর আগে, ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল করেছিলেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিজি আদালত তাকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে ২০১৯ সালে হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেয়।
এই মামলার পাশাপাশি, খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিদেরও সাজা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী, কিন্তু তিনি কখনো তার অপরাধ মেনে নেননি, এবং এই মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।