বিশ্ববাজারে চালের দাম কমছে, ভারতের রপ্তানি সিদ্ধান্তের প্রভাব
ভারত চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ শিথিল করায় বিশ্ববাজারে চালের দাম নিম্নমুখী। এর ফলে বিশেষত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে খাদ্যমূল্য সংকট কিছুটা কমেছে এবং মূল্যস্ফীতির চাপ হ্রাস পাচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে ভারতের চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার বিশ্ববাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সম্প্রতি আধসেদ্ধ চাল রপ্তানিতে শুল্ক তুলে নেওয়ার পর চালের গড় দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, থাইল্যান্ডের চাল রপ্তানির গড় মূল্য গত সপ্তাহে প্রতি টন ৫২৯ ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের মাসের চেয়ে ৮ শতাংশ কম। জানুয়ারিতে এই দাম ছিল গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে; সেই তুলনায় বর্তমানে দাম কমেছে ২১ শতাংশ। ভারতের ক্ষেত্রেও ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সেদ্ধ চালের দাম টনপ্রতি ৪৫০ থেকে ৪৮৪ ডলারে নেমে এসেছে, যা গত বছরের আগস্টের পর সর্বনিম্ন।
ভিয়েতনাম ফুড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির চালের দাম গত বছরের জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভিয়েতনামে বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম প্রতি টন ৫৩২ ডলারে বেচাকেনা হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৩৭ ডলার। ২০২২ সালে বিশ্বে যত চাল রপ্তানি হয়েছিল, তার ৪০ শতাংশই সরবরাহ করেছিল ভারত; অর্থাৎ ভারতের রপ্তানি সিদ্ধান্ত চালের আন্তর্জাতিক দামে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
২০২৩ সালে ভারত চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করলে বিশ্ববাজারে চালের দাম বেড়ে যায়। এশিয়া ও আফ্রিকার ক্রেতারা এরপর চাল কিনতে ছোটেন থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোর দিকে, ফলে এসব দেশেও চালের দাম বাড়তে থাকে। ইন্দোনেশিয়ার বুলোগ সম্প্রতি চাল ক্রয়ের টেন্ডার বাতিল করায় এবং থাইল্যান্ডের চালের চাহিদা স্থিতিশীল থাকায় ওই দেশেও চালের মূল্য কমেছে।
ভারতের বিধিনিষেধ শিথিল করার ফলে গত সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।