বিচ্ছিন্নতা থেকে বহুদূর পুতিন
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের তিন বছর পূর্ণ হতে আর কিছু মাস বাকি। এ সময়ে মস্কোকে নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো। একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে রাশিয়ার ওপর। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবে এত কিছু সত্ত্বেও পুতিনকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয়নি।
সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের কাজান শহরে তিন দিনব্যাপী ব্রিকস সম্মেলন শুরু হয়েছে। এই সম্মেলনে অন্তত ১২টি প্রভাবশালী দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নিচ্ছেন, যা বিশ্বে একটি নতুন শক্তিশালী জোটের উত্থানকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই জোট পুতিনের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। সম্মেলনের প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্রিকসের পাঁচ উদীয়মান অর্থনীতির দেশ– ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অংশগ্রহণে। এ ছাড়া নতুনভাবে জোটে যুক্ত হওয়া মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া এবং ইরানও অংশ নিচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন। অতিথি হিসেবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও অংশ নিচ্ছেন। যদিও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা অসুস্থতার কারণে অংশ নিচ্ছেন না।
২০২২ সালে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ায় এটাই সবচেয়ে বড় সম্মেলন। চলতি সপ্তাহে ব্রিকস দেশগুলোর এই একত্রিত হওয়াকে বৈশ্বিক ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। মস্কো, বেইজিং এবং তেহরান সরাসরিই পশ্চিমা দেশগুলোকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আসছে। এ সম্মেলন থেকে আরেকটি বিশেষ বার্তা যাচ্ছে— পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও তাদের মিত্রদের সঙ্গে থেকে বিশ্ব রাজনীতিতে ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়ছে। গত শুক্রবার পুতিন ব্রিকস দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঐক্যের প্রশংসা করে বলেছিলেন, যদি ব্রিকস দেশগুলো এবং তাদের মিত্ররা একসঙ্গে কাজ করে, তাহলে একটি টেকসই নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।