December 23, 2024
হাসিনা সরকারের অনুরোধ না রাখলেও ড. ইউনূসের কথা রাখছে মালয়েশিয়া

হাসিনা সরকারের অনুরোধ না রাখলেও ড. ইউনূসের কথা রাখছে মালয়েশিয়া

অক্টো ৫, ২০২৪

শেখ হাসিনা সরকারের অনুরোধ উপেক্ষা করলেও মালয়েশিয়া সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধ মেনে ১৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও যেসব বাংলাদেশি কর্মী নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, তাদের প্রথম ধাপে ৭ হাজার জনকে নেওয়া হবে। ড. ইউনূস এই সংখ্যা ১৮ হাজার উল্লেখ করলে আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, প্রথমে ৭ হাজার জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং সব ঠিকঠাক থাকলে বাকিদেরও নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াটি বেশ কিছু সময় ধরে স্থগিত ছিল। ২০২২ সালের আগস্টে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার পর বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর কাজ ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শুরু হয়, যা সিন্ডিকেট নামে পরিচিত ছিল। সরকার কর্মী প্রতি ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারণ করলেও সিন্ডিকেটের কারণে এ ব্যয় ৪ থেকে ৭ লাখ টাকায় পৌঁছায়। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, কর্মী প্রতি ব্যয় ছিল ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ২০২৩ সালের ৩১ মে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয়, এবং তখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৩ জন কর্মীর চাহিদাপত্র ছিল, যার মধ্যে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৭ হাজার জন বিমান টিকিট এবং ৯ হাজার ৯৭০ জন নিয়োগকর্তার নথি সংগ্রহ করতে না পারায় যেতে পারেননি।

হাসিনা সরকারের সময় একাধিকবার এই কর্মীদের পাঠানোর মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হলেও তা মালয়েশিয়া সরকার প্রত্যাখ্যান করে। সরকারের দাবি ছিল, যেতে না পারা ৭০ শতাংশ কর্মী তাদের টাকা ফেরত পেয়েছে, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, এই সংখ্যা মাত্র ২৫ শতাংশ। অনেক কর্মী পরিবারসহ সবকিছু বিক্রি করে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করলেও ফেরত পেয়েছেন মাত্র ৭৮ হাজার টাকা। সিন্ডিকেটের মূল হোতারা সরকার পতনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ থাকলেও প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, এইবারের প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হবে এবং সিন্ডিকেটের কোনো প্রভাব থাকবে না। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, বিদেশি কর্মীদের প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না এবং শ্রমিকদের আধুনিক দাসে পরিণত হওয়ার সুযোগ থাকবে না।