সংস্কার নিয়ে দুটি রোডম্যাপ চাইলেন জামায়াতের আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি রোডম্যাপ দাবি করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত এক আইনজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন।
শফিকুর রহমান বলেন, “একটি রোডম্যাপ যথেষ্ট নয়, দুটি রোডম্যাপ দিতে হবে। প্রথম রোডম্যাপ হবে সংস্কারের জন্য, যাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে কোন কোন বিষয়ে সংস্কার হবে। দ্বিতীয় রোডম্যাপ হবে সংস্কারের সময়সীমা নিয়ে। প্রথম রোডম্যাপ সফল হলে দ্বিতীয় রোডম্যাপও সফল হবে। তবে প্রথমটি সফল না হলে দ্বিতীয়টির কোনো প্রয়োজন নেই।”
তিনি আরও বলেন, “এই সংস্কার কার্যক্রমে রাজনৈতিক অংশীজন, সিভিল সোসাইটি, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সঙ্গে ঐকমত্যে আসতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি সফলভাবে এই কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারে, তাহলে তাদের নাম সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু তারা যদি কোনো বিচ্যুতি ঘটায়, তাহলে জাতির সর্বনাশ হবে। আমরা চাই সরকার দ্রুত সংস্কারের বিষয়টি আলোচনায় এনে এর উপসংহার টানুক।”
শফিকুর রহমান উল্লেখ করেন, “সংস্কারের রোডম্যাপ কার্যকর হলে খুব বেশি সময় লাগবে না। একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এটি সম্ভব। সংস্কার সম্পন্ন হলে দ্রুতই নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে দিতে হবে, কারণ গণতন্ত্রের দিকে ফিরে যাওয়ার জন্য নির্বাচন অপরিহার্য।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিকভাবে ইন্তেকাল করেছে। শেখ হাসিনা তাঁর দল ও দেশকে ধ্বংস করেছেন। আওয়ামী লীগে এমন কোনো ব্যক্তি নেই, যিনি দল পরিচালনা করতে সক্ষম। তাদের গণতান্ত্রিক চর্চার অভাবই এর জন্য দায়ী।”
শফিকুর রহমান দাবি করেন, “জামায়াতে ইসলামীতে গণতন্ত্রের চর্চা রয়েছে এবং এটি ব্যক্তি বা পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জনগণ যদি জামায়াতে ইসলামীকে দায়িত্ব প্রদান করে, তবে দেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনা হবে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি মিলবে।”
আইন ও বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচার চাই। অন্যায়ভাবে মামলা দায়ের না করার আহ্বান জানাই। যারা মামলা করবেন, তারা যেন সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন। অন্যায়ভাবে কাউকে মামলায় জড়ানো মানে চরম জুলুম করা।”
শফিকুর রহমান বিগত সরকারের সময়কার মামলা-হয়রানি প্রসঙ্গে বলেন, “রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দ্রুত খারিজ করা উচিত এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত বিগত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এবং অন্যান্য আইনজীবী ও নেতারা।