দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা, তীব্র ক্ষোভ
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে পিটিয়ে হত্যার দুটি ঘটনা ঘটেছে, যা দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে (এফ এইচ হল) চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড:
বুধবার রাতে ফজলুল হক হলে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে চোর সন্দেহে আটক করে মারধর করা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রথমে তাকে হলের অতিথিকক্ষে নিয়ে যায় এবং পরে দফায় দফায় মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে তাকে রাতের খাবার খাওয়ানো হয় এবং পরে আরও মারধর করা হয়। রাত ১২টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, তোফাজ্জল চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থী জালাল মিয়া জানিয়েছেন, জুনিয়র শিক্ষার্থীরা সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে মারধর করে, এবং তিনি শিক্ষকদের ডাকে ঘটনাস্থলে গেলেও মারধরে অংশ নেননি।
এই ঘটনার পর ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে জালাল মিয়া নামে একজন ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগী নেতা। এই ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড:
অন্যদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লাকে শিক্ষার্থীরা কয়েক দফা মারধর করে হত্যা করে। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক আহসান লাবিব এবং ছাত্রদলের চার নেতা-কর্মীসহ কিছু শিক্ষার্থী জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
অন্যান্য ঘটনা:
এর পাশাপাশি, খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মোহাম্মদ মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসব ঘটনা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে “মব জাস্টিস” বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে আইন তুলে নেওয়ার প্রবণতার প্রমাণ দিচ্ছে।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে।