যেভাবে হিজবুল্লাহর কেনা পেজারে বিস্ফোরক ছিল
লেবাননের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গলবার একযোগে পেজার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যাতে অন্তত ৯ জন নিহত এবং ৩ হাজারের বেশি মানুষ আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। এই পেজারগুলো লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করত। হিজবুল্লাহ এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করে। তবে ইসরায়েল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
নিরাপত্তা সূত্র জানায়, এই পেজারগুলো তাইওয়ানভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলো কোম্পানির, যার কাছ থেকে হিজবুল্লাহ ৫ হাজার পেজার কেনার আদেশ দিয়েছিল। পেজারের চালানটি বছরের শুরুর দিকে লেবাননে পৌঁছায়। তবে গোল্ড অ্যাপোলো কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হসু চিং-কুয়াং দাবি করেছেন, তার কোম্পানি এই পেজারগুলো তৈরি করেনি। এগুলো ইউরোপীয় একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি, যারা তাদের ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করার অনুমতি পেয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লোকজনের পোশাকের পকেট থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়, এরপর একের পর এক ছোট বিস্ফোরণ শুরু হয়। এসব বিস্ফোরণের শব্দ ছিল আতশবাজি বা বন্দুকের গুলির মতো। সিসিটিভি ফুটেজেও এক ব্যক্তির পকেটে পেজার বিস্ফোরিত হওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। প্রথম বিস্ফোরণের পর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিশ্লেষকরা বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। কেউ বলছেন, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে পেজারের ব্যাটারিগুলো অতিরিক্ত গরম করা হতে পারে, যা বিস্ফোরণের কারণ। অন্যদের মতে, সরবরাহ শৃঙ্খলে কোনো ত্রুটির ফলে এমনটা ঘটেছে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পেজারের ভেতরে ছোট পরিমাণ সামরিক মানের বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল, যা নির্দিষ্ট সংকেত পেয়ে বিস্ফোরিত হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক চাথাম হাউসের বিশেষজ্ঞ লিনা খাতিবের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, ইসরায়েল হিজবুল্লাহর যোগাযোগ নেটওয়ার্কে গভীরভাবে অনুপ্রবেশ করেছে।